মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে অর্থ সরবরাহ কমাতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি টাকার মান বাড়াতে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে ঋণের সুদহারের যে ৯ শতাংশ ক্যাপ ছিল, তা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১৮ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।
পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে নতুন মুদ্রানীতি তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান।
প্রশ্নোত্তর পর্বে আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, নতুন মুদ্রানীতিতে টাকার চাহিদা কমাতে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ঋণের সুদহারের যে ৯ শতাংশ ক্যাপ ছিল, তাও তুলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় আছে।
সবগুলো সূচকও ভালো আছে। তবে রিজার্ভ নির্দিষ্ট জায়গায় ধরে রাখা ও বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের বিনিময় হার ধরে রাখা এখনো চ্যালেঞ্জ। এসব বিষয় মাথায় রেখেই মুদ্রানীতি করা হয়েছে।
আব্দুর রউফ তালুকদার আরো বলেন, ‘ব্যালান্স অব পেমেন্ট ৬ বা বিপিএম৬-এর ফর্মুলায় যাব।
আইএমএফ সদস্যভুক্ত দেশগুলো বিপিএম৬-এর ফর্মুলা কার্যকর করেছে, আমরাও সেটা করব। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবও থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রিজার্ভ থেকে যেসব বিনিয়োগ করেছি, সেগুলো ঝুঁকিমুক্ত। শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণ বা অভ্যন্তরীণ যে তহবিল গঠন করা হয়েছে, এসব ঋণের গ্যারান্টার রয়েছে। সব টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ফেরত পাবে।
’
প্রশ্নোত্তর পর্বে গভর্নর বলেন, রিভার্স রেপো ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৪.২৫ শতাংশ থেকে ৪.৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রাখলে ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে বেশি সুদ পাবে। নীতি সুদহার ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদহারের করিডর প্রথা চালু হচ্ছে। এখন স্পেশাল রেপোকে বলা হবে স্ট্যান্ডার্ড ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ), নীতি সুদ ও রিভার্স রোপোকে বলা হবে স্ট্যান্ডার্ড ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ)।
মুদ্রানীতির কাঠামোগত ধরন বদলেছে উল্লেখ করে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বিশ্বব্যাপী বর্তমানে চার ধরনের লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক মুদ্রানীতি প্রচলিত আছে। সুদহার, মূল্যস্ফীতি, মুদ্রা সরবরাহ এবং বিনিময় হার টার্গেটিং। বাংলাদেশ ব্যাংক এত দিন ‘মূল্যস্ফীতি টার্গেটিং’ মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে আসছিল। এবার ‘সুদহার টার্গেটিং’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। মুদ্রানীতিতে এটা কাঠামোগত পরিবর্তন বলা যায়।
মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিতি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল বশরসহ গবেষণা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-